চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছিলেন, পর্যটন একটি বহুমুখী শিল্প এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনা পর্যটন শিল্প দ্রুত উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে এবং এটি একটি উদীয়মান কৌশলগত স্তম্ভ শিল্প, জীবিকা নির্বাহের শিল্প, ও সময়ের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যসহ একটি সমৃদ্ধ শিল্পে পরিণত হচ্ছে। 


চলতি বছরের মে দিবসের ছুটিতে চীনে পর্যটকের সংখ্যা ১৪০ কোটি পার্সনটাইমস ছাড়িয়ে যায়। এক্ষেত্রে দেশীয় পর্যটকের সংখ্যা ও মোট দেশীয় ভ্রমণব্যয়ও বৃদ্ধি পায়। বাসিন্দাদের ভ্রমণচাহিদাও ব্যাপকভাবে পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ সময় পরিবহন ও ক্যাটারিং ব্যয় বেড়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি, পরিষেবা শিল্পের বিকাশে নতুন প্রেরণা যোগ করেছে। প্রাচীন নগর ও সড়ক, পর্যটনসংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, এবং নতুন সাংস্কৃতিক স্থানগুলো খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পর্যটনপণ্য ও পর্যটনসেবা সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধতর হয়েছে। 

চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, সংস্কৃতি ও পর্যটন উন্নয়নের নিয়ম অনুযায়ী, ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চীনা পর্যটন শিল্প নতুন সুযোগ ও নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। 
২০২৪ সালের মে মাসে, পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি প্রথমবারের মতো, পর্যটন উন্নয়নের প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘জাতীয় পর্যটন উন্নয়ন সম্মেলন’ আয়োজন করে, যা নতুন যুগে সংস্কৃতি ও পর্যটনের সমন্বিত উন্নয়নের পথ আরও স্পষ্ট করে। সম্মেলনে বলা হয়, সততা ও উদ্ভাবন বজায় রাখা, গুণগত মান ও দক্ষতা উন্নত করা, এবং উন্নয়নকে একীভূত করার নীতি মেনে চলতে হবে; সরকার ও বাজার, সরবরাহ ও চাহিদা, সুরক্ষা ও উন্নয়ন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক, উন্নয়ন ও নিরাপত্তার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে; আধুনিক পর্যটন ব্যবস্থার উন্নতি, একটি শক্তিশালী পর্যটনরাষ্ট্র গঠনের কাজ ত্বরান্বিত করা, এবং পর্যটন শিল্পকে উন্নত জীবনযাপনের অংশ হিসেবে উৎসাহিত করতে হবে।


নতুন পণ্য, নতুন শিল্প, এবং নতুন পর্যটনকেন্দ্র একের পর এক চালু হচ্ছে। পর্যটন শিল্প আরও সমৃদ্ধ উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। দেশজুড়ে উচ্চমানের পর্যটনপণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পর্যটন বাজারের কার্যকলাপ ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে। 
সংস্কৃতি ও পর্যটনের একীকরণ ঐতিহ্যবাহী পর্যটন বাজারকে উন্নত করেছে। বিশ্ব অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য সফল আবেদনের পর, ২০২৫ সালের প্রথম বসন্ত উত্সবের ছুটিতে, সারা চীনের বিভিন্ন স্থানে মন্দির মেলা, ড্রাগন নৌকা প্রতিযোগিতা, লণ্ঠন নৃত্যসহ বিভিন্ন অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যধর্মী কার্যক্রম আয়োজনের মাধ্যমে, ঐতিহ্যগত চীনা নববর্ষ উদযাপিত হয়। সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল পণ্য বাজার পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে এবং জাদুঘরের সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল পণ্য পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, যাকে ভোগ-বাজারে বৈচিত্র্য যোগ করেছে।  বেইজিং, হ্যেলংচিয়াং, সিছুয়ান ও চেচিয়াংসহ বিভিন্ন স্থানে বরফ ও তুষার ক্রীড়া পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। রাতের পর্যটন একটি নতুন ধরনের ভ্রমণের মডেলে পরিণত হয়েছে।  


পর্যটকদের জন্য বৈচিত্র্যময়, কাস্টোমাইজড, ও মানসম্মত সেবার মান ক্রমশ উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে। স্থানীয় সাংস্কৃতিক ও পর্যটন বিভাগগুলো দর্শনীয় স্থান, ভ্রমণ সংস্থা, হোটেল, ও হোমস্টেগুলোকে টিকিটের দাম হ্রাস এবং ছাড় প্যাকেজের মতো অগ্রাধিকারমূলক কার্যক্রম চালু করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। গত মে মাসে বেশ কয়েকটি সংস্থা জনকল্যাণমূলক ভর্তুকিতে ১০০ কোটি ইউয়ানেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে এবং বিভিন্ন অঞ্চল ৬ হাজারেরও বেশি জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা করেছে। সবমিলিয়ে চীনের চীনের পযর্টন শিল্প উচ্চমানের উন্নয়নের পথ ধরে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। 

সূত্র : ছাই-আলিম-ওয়াং হাইমান, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।