চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতায় ১১ জুন উদ্বোধন হওয়া চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের ফলাফল বাস্তবায়নের জন্য সমন্বয়কারীদের মন্ত্রী পর্যায়ের সভার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন চিয়েন।
লিন চিয়েন বলেন, আজ চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের ফলাফল বাস্তবায়নের জন্য সমন্বয়কারীদের মন্ত্রী পর্যায়ের সভা হুনানের ছাংশা শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সভায় একটি অভিনন্দনপত্র পাঠিয়ে ঘোষণা করেছেন যে, চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী ৫৩টি আফ্রিকান দেশের ১০০ শতাংশ পণ্যের জন্য শূন্য শুল্ক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে, যা আফ্রিকার স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে চীনে রপ্তানি করার জন্য আরও সুবিধা প্রদান করবে। চীন ‘দশ অংশীদার পদক্ষেপ’ গভীরভাবে বাস্তবায়নের জন্য আফ্রিকার সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক, যা চীন এবং আফ্রিকাকে আধুনিকীকরণের প্রচার এবং নতুন যুগে একটি সর্বকালীন চীন-আফ্রিকার অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার উচ্চমানের উন্নয়নের প্রচারের জন্য পাঁচটি প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, চীন এবং আফ্রিকার একে অপরকে সাহায্য করে গ্লোবাল সাউথের ঐক্যের রক্ষক হওয়া উচিত; বৈদেশিক উন্মুক্ততা বজায় রেখে আন্তর্জাতিক মুক্ত বাণিজ্যের প্রচারক হওয়া উচিত; পারস্পরিক সুবিধা এবং জয়-জয় ফলাফল মেনে চলে বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ও সহযোগিতার সঙ্গী হওয়া উচিত; ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার মেনে চলে আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও শৃঙ্খলার রক্ষক হওয়া উচিত; বিনিময় এবং পারস্পরিক শিক্ষা মেনে চলে বিশ্ব সভ্যতার বৈচিত্র্যের প্রবর্তক হওয়া উচিত। উভয়পক্ষ গ্লোবাল সাউথের সংহতি ও সহযোগিতা বজায় রাখার বিষয়ে ছাং শা ঘোষণাপত্র জারি করেছে, চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল বাস্তবায়নের তালিকা এবং ২০২৬ সালে ‘চীন-আফ্রিকা সাংস্কৃতিক বিনিময় বর্ষে’র ধারণার দলিল প্রকাশ করেছে। আগামীকাল থেকে চতুর্থ চীন-আফ্রিকা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য প্রদর্শনীও ছাং শায় অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করেন ওয়াং ই।
মুখপাত্র আরো বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের নেতৃত্বে, চীন-আফ্রিকা সম্পর্ক উল্লম্ফন উন্নয়ন অর্জন করে আসছে। চীন টানা ১৬ বছর ধরে আফ্রিকার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। গত বছরের বেইজিং শীর্ষ সম্মেলনের পর থেকে, আফ্রিকায় চীনের নতুন বিনিয়োগ ১৩.৩ বিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়েছে এবং আফ্রিকায় মোট আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ১৫০ বিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়েছে।
চীন সর্বদা আফ্রিকান দেশগুলোর সাথে সংহতি ও সহযোগিতা জোরদার করাকে নিজের বৈদেশিক নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল বাস্তবায়নে দৃঢ়ভাবে উৎসাহিত করতে, ফোরামের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য মনোযোগ দিয়ে পরিকল্পনা করতে, চীনা-বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকীকরণ ব্যবহার করে আফ্রিকার উন্নয়ন ও পুনরুজ্জবীনে সহায়তা করতে এবং মানবজাতি অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তুলতে চীন-আফ্রিকা শক্তি প্রদান করতে ইচ্ছুক বলে মুখপাত্র উল্লেখ করেন।
সূত্র:লিলি-হাশিম-তুহিনা,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।