NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, মে ১১, ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত নন্দীগ্রামের গাছিরা


এম আব্দুর রাজ্জাক প্রকাশিত:  ০৮ মে, ২০২৫, ০৬:১৬ এএম

খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত নন্দীগ্রামের গাছিরা

এম আব্দুর রাজ্জাক, বগুড়া থেকে : নন্দীগ্রামে চলে এসেছে শীতের আগমনি বার্তা। সকাল ও সন্ধ্যায় হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে হালকা কুয়াশায় ঢেকে পড়ছে চারদিক। তাই শিশির ফোঁটায় জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। শীতের আমেজের শুরুতে নন্দীগ্রামের গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছে। প্রতিদিন সকালে হালকা শীত উপেক্ষা করে গাছিরা তাদের গাছ কাটার যন্ত্র নিয়ে গাছ পরিচর্যা করতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

 শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি ও পায়েস খাওয়ার ধুম। এছাড়াও খেজুর পাতা দিয়ে তৈরী হয় আকর্ষণীয় মজবুত পাটি। এমনকি জ্বালানি কাজেও ব্যাপক ব্যবহার হয়। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার সারি সারি পরিবেশবান্ধব খেজুর গাছ। নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে এবার রস সংগ্রহের জন্য ৭হাজার খেজুর গাছ প্রস্তুত করা হয়েছে। ৭হাজার খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে তা থেকে ২২৫ মেট্রিকটন গুড় উৎপাদন হবে বলে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সুত্র জানাই। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, এবার গাছ কাটার দাম ও বেশ বেড়েছে। প্রতিদিন গাছিরা ৭০ থেকে ৮০ টি গাছ কেটে প্রস্তুত করছে। 

এতে তারা দৈনিক পারিশ্রমিক পাচ্ছে ৮০০ টাকা। গাছ প্রস্তুত করার পর শুরু করা হবে রস সংগ্রহ। এরপর তৈরি হবে উন্নত মানের গুড় ও পাটালি। উপজেলার ধুন্দার গ্রামের কৃষক আরিফ হোসেন জানান, নন্দীগ্রামে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তাই রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্ষন গ্রামের কৃষক আজাদ বলেন, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টি গাছ কেটে প্রস্তুত করছি দৈনিক পারিশ্রমিক পাচ্ছি ৮০০ টাকা এতে কিছুই হচ্ছে না। সব জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাহিদামতো পারিশ্রমিক মিলছে না গাছ কাটার যন্ত্রের দাম বেড়েছে গাছ কাটার পারিশ্রমিক মূল্য আরো বাড়ালে ভালো হতো। মুরাদপুর গ্রামের আকবর হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ২০০ গাছ থেকে খেজুরের রস আহরণ করবেন। খেজুরগাছের রস, গুড়-পাটালি বিক্রয় করে খরচ বাদে প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভের আশা করছি। 

উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাকিরুল ইসলাম ও জহুরুল হোসেন জানান ৫টি ইউনিয়নে এবার রস সংগ্রহের জন্য ৭ হাজার খেজুর গাছ প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলা জুড়ে খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছিরা আগাম খেজুর গাছ প্রস্তুত করছে। সঠিক পদ্ধতিতে, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে যেন রস-গুড় উৎপাদন করে গাছিরা এজন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। জানতে চাইলে কৃষি কর্মকর্তা গাজিউল হক বলেন, নন্দীগ্রামে একটু একটু করে চলে এসেছে শীতের আগমনি বার্তা, সকাল ও সন্ধ্যায় হালকা হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই শীতের আমেজের শুরুতেই খেজুর রস সংগ্রহের জন্য ৭হাজার খেজুর গাছ প্রস্তুত করেছে নন্দীগ্রামের গাছিরা। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুই ধার দিয়ে খেজুর গাছ লাগানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। খেজুর গাছ ফসলের কোন ক্ষতি করেনা এই গাছে বাড়তি কোনো খরচ করতে হয়না। চলতি মৌসুমে ৭হাজার  খেজুর গাছ থেকে ২৫০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদিত হবে। 

এছাড়া গাছিরা খেজুর রস দিয়ে গুড়ের বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও মিষ্টান্ন তৈরি করে নিকটস্থ বাজারে বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আগাম খেজুর গাছ ঝুড়া শুরু হয়েছে। এখান থেকে চাষিরা প্রতিদিনি রস সংগ্রহ শুরু করছে। এবং মানসম্মত খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য তাদের কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।