আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রকাশিত: ২৪ মে, ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২২ মে বিকেলে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সাথে টেলিফোনে কথা বলেন।
ফোনালাপে সি বলেন, গত বছরের মে মাসে যখন আমি ফ্রান্স সফর করি, তখন উভয়পক্ষ চীন ও ফ্রান্সের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া, দূরদর্শিতা, পারস্পরিক সুবিধা এবং জয়-জয় সহযোগিতার চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং এটিকে নতুন সমসাময়িক অর্থ প্রদান করতে সম্মত হয়েছিল। তারপর থেকে, চীন-ফ্রান্স সহযোগিতা অনেক নতুন অগ্রগতি অর্জন করেছে। দু’পক্ষের উচিত কৌশলগত যোগাযোগ জোরদার করা এবং ঐকমত্যকে কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ, মহাকাশ এবং পারমাণবিক শক্তিসহ ঐতিহ্যবাহী ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা আরও গভীর করা এবং ডিজিটাল, সবুজ, জৈব চিকিৎসা ও রুপালী অর্থনীতিসহ উদীয়মান ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি করা এবং মানুষে মানুষে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করা উচিৎ।
সি বলেন, এই বছর বিশ্ব ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যুদ্ধের বিজয় এবং জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৮০তম বার্ষিকী। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং স্বাধীন প্রধান দুটি দেশ হিসেবে চীন ও ফ্রান্স উভয়ই যুদ্ধোত্তর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার স্রষ্টা এবং নির্মাতা। আমাদের ঐক্য ও সহযোগিতা জোরদার করে যৌথভাবে জাতিসংঘের কর্তৃত্ব ও মর্যাদা রক্ষা করা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ম ও বিশ্ব অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা এবং সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতা অনুশীলন করা উচিৎ। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যত জটিল হবে, চীন ও ফ্রান্সকে তত বেশি সঠিক কৌশলগত পন্থা বাছাই করতে হবে। যৌথভাবে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য শক্তি, বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি প্রচারের জন্য একটি উন্মুক্ত শক্তি এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একটি প্রগতিশীল শক্তি হয়ে উঠা উচিৎ।
সি বলেন, চীন সর্বদা বহুমেরু বিশ্বে ইউরোপকে একটি স্বাধীন মেরু হিসেবে বিবেচনা করে আসছে, কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন জোরদার করতে এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে ইইউকে সমর্থন করে। চীন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং উভয়পক্ষ, তথা বিশ্বের জন্য আরো বেশি কল্যাণকর ফলাফল অর্জনের জন্য ইইউর সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক বলে সি উল্লেখ করেন।
মাখোঁ বলেন, ফ্রান্স-চীন এবং ইউরোপ-চীন সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশ্বব্যাপী তাৎপর্যপূর্ণ। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যতই পরিবর্তিত হোক না কেন, চীনের সাথে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া এবং এক-চীন নীতির প্রতি দৃঢ়ভাবে অনুগত থাকার ক্ষেত্রে ফ্রান্সের অবস্থান কোনওভাবেই পরিবর্তিত হবে না। আমরা চীনের সাথে আর্থ-বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারিক সহযোগিতা জোরদার করতে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভালো উন্নয়নের গতি বজায় রাখতে এবং ফ্রান্স-চীন সম্পর্কের বৃহত্তর উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে ইচ্ছুক।
দুই প্রেসিডেন্ট ইউক্রেন সংকট, ইসরায়েল -ফিলিস্তিন সংঘাত এবং ইরানের পারমাণবিক সমস্যাসহ অভিন্ন উদ্বেগের সাথে জড়িত আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়েও গভীরভাবে মতবিনিময় করেছেন।
সূত্র : লিলি-হাশিম-তুহিনা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।