NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, মে ৪, ২০২৫ | ২১ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo

ধনী হওয়ার নতুন পথে বৈশিষ্ট্যময় শিল্পে দক্ষিণ সিনচিয়াং


ছাই উইয়ে মুক্তা,বেইজিং প্রকাশিত:  ০৪ মে, ২০২৫, ০৮:০৬ এএম

ধনী হওয়ার নতুন পথে বৈশিষ্ট্যময় শিল্পে দক্ষিণ সিনচিয়াং

 


২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সিনচিয়াং কর্মসভা আয়োজনের পর, সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের পৌর সরকার গ্রাম পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। বর্তমানে দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের অর্থনীতি ও সমাজ অনেক উন্নত হয়েছে এবং অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। আজকের আসরে আমি আপনাদেরকে দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের বৈশিষ্ট্যময় শিল্প উন্নয়নের বিষয় নিয়ে কিছু কথা বলবো।

ভৌগোলিক অবস্থান ও বিরূপ জলবায়ুর কারণে আগে দক্ষিণ সিনচিয়াং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কৃষি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যময় শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে অনেক দূর এগিয়েছে।  

নাং হলো সিনচিয়াংয়ের এক ধরণের ঐতিহ্যগত খাবার। তা বাংলাদেশের নানের মতো। নাং গোটা চীনে অনেক জনপ্রিয়। কারগাশ শহরের নাং উৎপাদনকেন্দ্রে বিভিন্ন ধরণের নাং উত্পাদিত হয়। সেখানে প্রবেশ করলেই নাংয়ের সুগন্ধ পাওয়া যায়। কেন্দ্রের উপপরিচালক আব্দুলানি স্টিক বলেন, কেন্দ্রে ২০১টি সমবায় ও গ্রাম পর্যায়ের ২৩০০টি ছোট রান্নাঘর আছে। এছাড়াও ৫৪টি খাদ্য কোম্পানি রয়েছে। 

আব্দুলানি স্টিক বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা আগে একা একা নাং উত্পাদন ও বিক্রয় করতেন। তখন তাঁদের আয় খুবই কম ছিল। বর্তমানএ তাঁরা একসঙ্গে কেন্দ্রে উৎপাদন ও বিক্রয় করেন, তাঁদের শুধুমাত্র বিদ্যুৎ ও গ্যাসের খরচ দিতে হয়। এখন তাঁদের আয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে কেন্দ্র স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে একটি পরিচ্ছন্ন পরিষ্কার ও সুপরিবেশ দিয়েছে।

৩৫ বছর বয়সী মুসাজান আয়েশার পরিবার তিন প্রজন্ম ধরে নাংয়ের ব্যবসায় করছে। তিনি বলেন, নতুন শিল্পকেন্দ্রের পরিবেশ অনেক ভাল ও সুবিধাজনক। তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রে নাং উৎপাদন ও বিক্রয় করার পর আমার আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে আমি একটি নতুন গাড়ি কিনেছি এবং কয়েকজন কর্মী নিয়োগ দিয়েছি। আমার মাসিক আয় ১০ হাজার ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে।” 

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় কারগাশ এলাকা নাং শিল্পকেন্দ্র, নাং সমবায় ও নাং দোকানের মাধ্যমে কাশগার স্বাদ নামের ব্রান্ড গড়ে তোলা হয়েছে এবং নাং চীনের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় হয়। নাং শিল্প স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য ৩৭ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এখানে প্রতিদিন নাং বিক্রয়ের সংখ্যা ৬৬ লাখেরও বেশি। 

শাছে জেলা হলো প্রাচীন রেশমপথে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নগর। এখানে এখানে একটি চমৎকার ইতিহাস ও সংস্কৃতি রয়েছে, তবে জেলাটি বেশি জনসংখ্যা ও কম জমির সমস্যার মুখোমুখি হয়। এ বছরের প্রথম দিকে শাছে জেলার জনশূন্য গোবি মরুভূমিতে ২০ হাজার একর গোবি শিল্প পার্ক নির্মিত হয়। পার্কে ৪ হাজারটি গ্রীণহাইস ও ২ লাখ ছাগলের পালন কেন্দ্র নির্মিত হয় এবং ৩ হাজারজন স্থানীয় বাসিন্দার জন্য এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। 

শাছে জেলার গোবি শিল্প পার্কের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ওয়েই স্যিং ইয়া বলেন, পার্কটির সকল গ্রীণহাইসে টমেটো ও মরিচ চাষ করা হয়। 

তিনি বলেন,“আমরা গ্রীণহাউসগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করি। এ পদ্ধতিতে প্রযুক্তিবিদদের প্রশিক্ষণ ও ফসলের বিক্রয়ের সুবিধা দেওয়া হয়। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের আয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।” 
পার্কটির কাছাকাছি অবস্থিত একটি গ্রামের বাসিন্দা মেমেদিনিয়াজ আয়হিতি ও তাঁর স্ত্রী গত বছরের অগাষ্ট মাসে শিল্প পার্কে দুটি গ্রীনহাউসের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

প্রযুক্তিবিদদের নির্দেশনায় গ্রীনহাউসে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় সুবিধার সাহায্যে তাঁদের এক বছরে মরিচ উৎপাদিত হয় প্রায় ৪ টন। এ সম্পর্কে মেমেদিনিয়াজ বলেন, “আগে আমাদের আয় খুবই কম ছিল। তবে দুই মাসের মধ্যে গ্রীণহাউসের আয় হবে ৮ হাজার ইউয়ান আরএমবি। গ্রীণহাউসে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা। কাজ কম, আয় বেশি।” 

সবুজ গ্রীণহাউস ছাড়াও পার্কে অনেক ওয়ালনাট বন রয়েছে। আগের গোবি মরুভূমি বর্তমান স্থানীয় বাসিন্দাদের সোনালী ও রূপালী পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। বৈশিষ্ট্যময় শিল্প দক্ষিণ সিনচিয়াং বাসিন্দাদের ধনী হওয়ার নতুন পথ। সূত্র: ছাই ইউয়ে,সিএমজি।