শেখ হাসিনা সোমবার পদত্যাগ করে ভারত চলে যান । পনের বছরের দোর্দণ্ড প্রতাপের শাসনের পর ছাত্র আন্দোলনের মুখে অনেকটা হুট করেই দেশ ছেড়ে শেখ হাসিনার ভারতে চলে যাওয়ার ঘটনায় তার দল আওয়ামী লীগের মধ্যে কার্যত চরম বিপর্যয় ও হতাশা নেমে এসেছে।  দলটির ‘হতভম্ব’ নেতাকর্মীদের অনেকের মধ্যেই তৈরি হয়েছে ক্ষোভ এবং বিস্ময়, কারণ এমন কিছু হতে পারে তার কোন ধারণা একদিন আগেও তারা পাননি। গত দু দিনে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কয়েকজনের সাথে কথা বলেএমন ধারণা পাওয়া গেছে।  এমন পরিস্থিতিতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরাই কার্যত এখন ‘আত্মগোপনে’ এবং কবে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন কিংবা আদৌ পারবেন কি-না তা নিয়েও উদ্বিগ্ন অনেকে। এর ফলে দলকে টিকিয়ে রাখা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে দলের অনেকের মধ্যে।  যদিও শেখ হাসিনার নিজ জেলা গোপালগঞ্জে ‘তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করার’ প্রতিবাদে মঙ্গলবার দু দফা মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগের একদল নেতাকর্মী।   দলটির মধ্যম পর্যায়ের একজন নেতা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন নতুন সরকারে কারা আসে সেটা দেখে এবং যদি সম্ভাব্য ধরপাকড় এড়ানো সম্ভব হয়, তাহলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবার পর নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের চেষ্টা করবেন তারা।  এখানে বলে রাখা ভালো, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কিছু নেতার সাথে সোম ও মঙ্গলবার বিবিসির কথা হয়েছে। তবে তারা সবাই তাদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।

 ওদিকে শেখ হাসিনা ভারতে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তার সন্তান সজিব ওয়াজেদ জয় বিবিসিকে জানিয়েছেন যে তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না এবং তিনি হতাশ।  এর মাধ্যমে দেশের রাজনীতির মতো ‘আওয়ামী লীগেও আপাতত শেখ হাসিনা অধ্যায় শেষ হলো’ বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন।  “তবে রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই। কিছুদিন আগেও যেমন আজকের পরিস্থিতি অবাস্তব ছিলো। তবে এখনকার পরিস্থিতি বিবেচনা করলে ও তার ছেলের জয়ের কথা আমলে নিলে আপাতত তার রাজনীতিতে ফেরা কঠিন”, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।