মাত্র ১৫ বছর বয়সেই শিশু ও কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে দেশের এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছেন কুমিল্লা শহরের সুহানা রহমান সুকন্যা। ‘টক হোপ’ নামক একটি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্পের শিশু খাতের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে সুহানার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে দেশের ৮০০টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে, যার মাধ্যমে ১ লক্ষ ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
সুহানার জন্ম ২০০৯ সালের ২২ জুলাই, কুমিল্লা শহরে। পিতা মোহাম্মদ শোয়েবুর রহমান একজন সরকারি কর্মকর্তা এবং মাতা খালেদা সুলতানা মুন্নী। পরিবার থেকেই পাওয়া মানবিক মূল্যবোধ ও জনসেবার চেতনা তাকে খুব অল্প বয়স থেকেই সামাজিক সচেতনতায় যুক্ত করেছে।
সুহানা ‘SHADOW’ নামক মানবিক সংস্থার আওতাধীন ‘Talk Hope’ প্রকল্পের শিশু খাতের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য - শিশু ও কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি, আবেগ প্রকাশে সহায়তা, মানসিক চাপ মোকাবেলায় প্রশিক্ষণ এবং স্কুলে নিরাপদ মানসিক পরিসর গড়ে তোলা।
সেশনগুলোতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা শিখছে কীভাবে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে হয়, মানসিক চাপ ও দ্বন্দ্ব সামলাতে হয় এবং সহপাঠীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হয়। বিশেষত গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত এলাকাগুলোতে এই কার্যক্রম ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
সুহানা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে ইন্টার্যাক্ট ক্লাব অব ঢাকা-এর প্রতিষ্ঠাতা।
রোটারি ইন্টারন্যাশনাল-এর এই যুব শাখা তরুণদের নেতৃত্বগুণ ও সামাজিক দায়িত্ববোধ গড়ে তুলতে কাজ করছেন।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ সুহানা পেয়েছেন একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
সুহানার স্কুলভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সুহানার কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে ড. মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বাবু, প্রেসিডেন্ট, এশিয়ান ক্লাব লিমিটেড ও মহাসচিব, চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী কেন্দ্র লিমিটেড বলেন,“সুহানা এক নতুন ধরণের নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি। তার চিন্তাশক্তি ও হৃদয়ের প্রশস্ততা সত্যিই প্রশংসনীয়। সে শুধু আশা নয়, বাস্তবিক পরিবর্তনের প্রতীক।”
মো. সাদ্দাম হোসেন রনি,SHADOW ও Talk Hope-এর প্রতিষ্ঠাতা, যিনি সুহানার ইন্টার্যাক্ট উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি বলেন, “আমি তাকে দেখেছি কৌতূহলী সদস্য থেকে পরিণত একজন প্রভাবশালী কণ্ঠে। সুহানার নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য হলো শৃঙ্খলা, সহানুভূতি ও দূরদৃষ্টি।”
দিদারুল আলম, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ফোরামের সমন্বয়ক বলেন, “শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য এখন একটি বৈশ্বিক ইস্যু। সুহানা তা মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে একটি বাস্তব ও কার্যকর সমাধান দিচ্ছে, যা বৈশ্বিক আলোচনাতেও জায়গা করে নেওয়ার যোগ্য।”
টক হোপ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা কানন ফয়সাল,
বলেন,“সুহানার নেতৃত্বে আমরা প্রকল্পটির শিশু খাতকে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে দেখতে পেয়েছি। সে আমাদের ভবিষ্যৎকে এখনই গড়তে শুরু করেছে।”
সুহানা ইতোমধ্যে বেশকিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি ‘টক হোপ’এর শিশু খাতের প্রধান সমন্বয়ক, ৮শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা, ১ লক্ষ ৫০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে আবেগিক সক্ষমতা ও সহানুভূতি তৈরি,ইন্টার্যাক্ট ক্লাব অব ঢাকা-এর প্রতিষ্ঠাতা,রোটারি ইন্টারন্যাশনাল এবং জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মঞ্চে
সহানুভূতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানসিক স্বাস্থ্য প্রবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা।
এই বয়সে যেখানে অধিকাংশ কিশোর-কিশোরী নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে ব্যস্ত, সেখানে সুহানা রহমান অন্যদের ভবিষ্যৎ আলোকিত করতে কাজ করছেন। তাঁর হাতে তৈরি হচ্ছে একটি শক্তিশালী, মানবিক ও সচেতন প্রজন্ম। সুহানা শুধু একজন কিশোর নেত্রী নয়, সে একটি স্কুলভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনত আন্দোলনের নাম।