NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, শুক্রবার, মে ১৬, ২০২৫ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন ফিলিস টেইলর, গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, ক্যাপ্টেন (অব.) সিতারা বেগম, বীর প্রতীক  এবং সাদাত হোসাইন ৮ মাসে ৯০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে: মির্জা আব্বাস Bangladesh pledges specialized units, new partnerships, and several pilot  projects at the 2025 Berlin UN Peacekeeping Ministerial আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করায় ভারত উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র-সরঞ্জাম কিনবে সৌদি যুদ্ধবিরতিতে ভারত-পাকিস্তান বৈশাখী আবাহনে মানবের জয়গান নারীর ক্ষমতায়নে রবীন্দ্রনাথ: আধুনিকতার অগ্রদূত নিউইয়র্কের অ্যাসেম্বলি ও সিনেট মেম্বারের সাথে বিভিন্ন  দাবী-দাওয়া নিয়ে আলোচনা ভারত পাকিস্তান উত্তেজনায় কী বলছেন বিশ্বনেতারা
Logo
logo

কলের এই যুগেও গরু দিয়ে হালচাষ করেন গাইবান্ধার মোজাম্মেল


এম আব্দুর রাজ্জাক প্রকাশিত:  ১৬ মে, ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম

কলের এই যুগেও গরু দিয়ে হালচাষ করেন গাইবান্ধার মোজাম্মেল

এম আব্দুর রাজ্জাক উত্তরবঙ্গ থেকে :  জোড়া গরু জুত করে বাঁধা হয়েছে জোয়ালে। দুটি গরুর মুখেই টোনা আঁটা। কিন্তু মোজাম্মেল হকের মুখের বিরাম নেই– হু, হট, হট। ডাইনে বললে ডানে যাচ্ছে গরু, বাঁয়ে বললে বামে। মনের সুখে হালচাষ করছেন মোজাম্মেল।সম্প্রতি বিস্মৃতপ্রায় এ দৃশ্যের দেখা মিলল গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কুমারগাড়ী গ্রামে। গ্রামীণ বাংলায় একসময়ের অতি পরিচিত এ দৃশ্যের জায়গা অনেক আগেই দখলে নিয়েছে ইঞ্জিনচালিত কলের হাল। মোজাম্মেল হকের বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ডুমুরগাছা গ্রামে। এটি পলাশবাড়ীর সীমান্তবর্তী কুমারগাড়ীর লাগোয়া।

কুমারগাড়ী গ্রামের কজন জানান, অনেক এলাকায় এখন বিস্মৃতপ্রায় হলেও এ এলাকায় মোজাম্মেল হকের কল্যাণে মাঝেমধ্যেই গরুর হালের দেখা মেলে। আশপাশে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীর কয়েক গ্রামের মধ্যে মোজাম্মেলের সহ গরুর হাল রয়েছে মোটে তিনটি। অথচ আগে প্রতি গেরস্তবাড়িতেই গরুর হাল ছিল বাধ্যতামূলক। এলাকার বয়সী লোকজন বলেন, সাত সকালে গরু আর লাঙল কাঁধে নিয়ে মেঠোরাস্তা ধরে জমিতে হালচাষ করতে যাওয়া একসময় পুরো বাংলাদেশে ছিল খুব পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু গত তিন দশকে এ দৃশ্য প্রায় পুরোটাই পালটে গেছে। গরুর হালের এ জায়গা এখন নিয়েছে কলের হাল। অনেক এলাকার শিশুরা টেলিভিশন ছাড়া গরু দিয়ে হালচাষ চোখেই দেখেনি। হয়ত বাপ-দাদার মুখে শুনেছে।

ডুমুরগাছাসহ কয়েকটি গ্রামের লোকজন কুমারগাড়ীর ছাতিয়ানতলায় বাজার করেন। এ বাজারের কয়েকজন জানান, আজকাল গরুর হাল চোখে পড়ে কম। তারা গরুর বদলে কলের হাল দিয়েই চাষবাস করেন। ছাতিয়ানতলা বাজারে গোখাদ্য, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশকসহ মনিহারি দোকান করেন টিটু মন্ডল। তিনি বলেন, কলের হালে দ্রুত অনেক জমি চাষ করা যায়। সময় লাগে কম। এ কারণে দ্রুত এ হাল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কলের হালের এই যুগেও কেন পুরাতন গরুর হাল ধরে রেখেছেন– এ প্রশ্নের উত্তরে মোজাম্মেল বলেন, প্রথমত বাপ-দাদার এ পেশা তিনি ছাড়তে চাননি। ছোটবেলা থেকে হালচাষ শিখেছেন। এটা তার অভ্যাস হয়ে গেছে।

গরুর হালের এ চাষী জোর দিয়ে বলেন, ‘আমার হালের কাছে কলের হালের খাওয়া (পাত্তা) নেই। কলের হালে চাষ দিয়ে জমিতে যে ফসল ফলবে, গরুর হালচাষে একই জমিতে তিনগুণ ফসল হবে। তাই সময় একটু বেশি লাগলেও গরুর হালচাষ লাভজনক।’ গরুর হালের চাহিদা কেমন– জানতে চাইলে মোজাম্মেল বলেন, তিনি নিজের জমি চাষ করেও অন্যের জমি চাষের ‘অর্ডার’ পান। এ জন্য দিনে পাঁচ শ করে টাকা নেন তিনি। তবু সব চাহিদা পূরণ করার সময় পান না।

গরুর হাল দিয়ে চাষ লাভজনক– মোজাম্মেলের এমন মন্তব্যে সায় দিলেন কৃষক শাহারুল খন্দকারও। তিনি বললেন, গরুর হাল দিয়ে চাষ করলে জমি অনেক গভীর হয়। মাটিতে পানি থাকে বেশি। এ ছাড়া মই দিলে জমি সমান হয় ভালো। এতে ফসল বেশি ফলে। এই শাহারুলের জমিতেই হালচাষ করছিলেন মোজাম্মেল হক। যখন সেখান থেকে চলে আসি তখনও পেছন থেকে ভেসে আসছিল বিস্মৃতপ্রায় এক হাঁক– হু, হট, হট!