- ওয়াহিদুজ্জামান বকুল, কবি ও প্রাবন্ধিক

    আজ এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, বন্ধুত্বের মূর্ত প্রতীক হারুনর রশীদ পিন্টুর জন্মদিন। তার জন্মদিন উপলক্ষে দাবাঘরসহ বিভিন্ন সংগঠন তাকে ভালোবাসায় সিক্ত করছে, আয়োজন করেছে পৃথক পৃথক উৎসব। পিন্টু কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন, কিন্তু তার জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ও ভালোবাসা অর্জনের পেছনে রয়েছে তার অসাধারণ মানবিকতা, সাংস্কৃতিক বোধ ও সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড। সাবেক ফুটবলার ও নাট্যব্যক্তিত্ব হিসেবে তার জীবনচর্চা বহুমুখী, যা তাকে ভিন্ন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। সাফল্য কখনো নিজে থেকে আসে না, তা অর্জন করতে হয় কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও সততার মাধ্যমে। পিন্টু তার ব্যক্তিত্ব, মেধা ও অকৃত্রিম মানবিকতার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।     বন্ধুত্ব এক অনন্য সম্পর্ক, যা কেবল আনন্দ ভাগাভাগির জন্য নয়, বরং দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়েই তার প্রকৃত মূল্যায়ন হয়। হারুনর রশীদ পিন্টু সেই বিরল ব্যক্তিত্বদের একজন, যিনি বন্ধুত্বকে শুধু আবেগের জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখেননি, বরং তা কাজে পরিণত করেছেন। তার আন্তরিকতা, ভালোবাসা, সহযোগিতার মনোভাব এবং বন্ধুত্বের বন্ধন রক্ষা করার নিরলস প্রচেষ্টা তাকে আমাদের সবার কাছেই বিশেষভাবে প্রিয় করে তুলেছে।  পিন্টুর এক অসাধারণ গুণ হলো, সে সবার মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে জানে। প্রবাসী বন্ধুরা যখন দেশে ফিরে আসে, তখন তাদের পুনর্মিলনের জন্য পিন্টুর নিরলস প্রচেষ্টা চোখে পড়ে। তার উদ্যোগেই আনন্দ ভ্রমণ, সাংস্কৃতিক আয়োজন এবং সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হয়। শুধু বন্ধুদের জন্যই নয়, সামগ্রিকভাবে সমাজের জন্য সে এক আলোকবর্তিকা।     তার সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল প্রতিভা অসাধারণ। কলেজ জীবনে পিন্টু শুধু একজন মেধাবী শিক্ষার্থীই ছিলেন না, বরং সাহিত্য, নাটক, আবৃত্তি ও ক্রীড়াঙ্গনে ছিলেন সমানভাবে সক্রিয়। রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা তার সাবলীল আবৃত্তি শুনে সবাই মুগ্ধ হতো। নাট্যচর্চা, খেলাধুলা—সব জায়গায় তার অবদান ছিল লক্ষণীয়। তার এই সাংস্কৃতিক চেতনা আজও অব্যাহত রয়েছে এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে সমাজ ও মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।  পিন্টুর সবচেয়ে বড় শক্তি তার মানবিকতা। বিপদে-আপদে, অসুস্থতার সময় কিংবা দুঃসময়ে সে কখনো পিছপা হয় না। রাত যত গভীরই হোক, সে বন্ধুর পাশে থাকতে প্রস্তুত। তার এই মানবিক দিকই তাকে ব্যতিক্রমী ও শ্রদ্ধার্হ করে তুলেছে।  তার নেতৃত্বগুণও অনন্য। সে কেবল বন্ধুত্বের বন্ধন রক্ষা করে না, বরং সবাইকে একত্রিত করে সাংগঠনিক ও সামাজিক কাজে সক্রিয় রাখে।

তার নেতৃত্বে আমরা বহু স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছি, যা আমাদের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করেছে।     হারুনর রশীদ পিন্টুর জনপ্রিয়তা কোনো প্রচারের ফল নয়, বরং এটি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা, সহযোগিতামূলক মনোভাব এবং দায়িত্বশীলতারই স্বীকৃতি। তিনি রাজনৈতিক কোনো ব্যক্তি নন, কিন্তু তার চারপাশের মানুষদের প্রতি তার দায়িত্বশীল আচরণ ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা তাকে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। তার এই গ্রহণযোগ্যতা কেবল ব্যক্তিগত গুণের কারণে নয়, বরং তার নিরলস মানবিক প্রচেষ্টারই ফল।  পিন্টু আমাদের দাবাঘরের এক উজ্জ্বল বাতিঘর, যে বন্ধুত্বের বন্ধনকে সবার মাঝে অটুট রেখেছে। সে শুধু আমাদের বন্ধু নয়, বরং আমাদের সংগঠনের অভিভাবক, আস্থার প্রতীক এবং অনুপ্রেরণার উৎস। তার উপস্থিতি আমাদের প্রতিটি উদ্যোগকে অর্থবহ করে তোলে এবং আমাদের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। এমন একজন মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা সত্যিই ভাগ্যের বিষয়। আমরা পিন্টুর সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু এবং আরও সাফল্য কামনা করি। সে যেন তার কর্মের মাধ্যমে আমাদের অনুপ্রাণিত করে যেতে পারে এবং আমাদের বন্ধুত্বের এই সম্পর্ক আজীবন অটুট থাকে, এটাই আমাদের সকলের প্রত্যাশা।